তিন বছর মেয়াদি রপ্তানি নীতি অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাশিয়া ইউক্রেনের চলমান সংঘাত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধের পক্ষে নই। তবে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয় থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশের জনগণের কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সেজন্য রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওটা আলোচনা হয়েছে। আমরা অবজার্ব (পর্যবেক্ষণ) করতেছি, ডেফিনেটলি আমরা তো যুদ্ধের পক্ষে কোনো কথা বলিনি। এটা আলোচনা হয়েছে এবং ফরেন মিনিস্ট্রি বা সবাইকে আরও দু-একদিন বিষয়টি অবজার্ব করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পোল্যান্ড ও রোমানিয়াতে আমাদের যারা রাষ্ট্রদূত আছেন, তারা ইতোমধ্যে দেখছেন, সেখানে কী হচ্ছে, ওখানে বাংলাদেশিদের কী অবস্থা, তারা আমাদের আপডেট দিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে।
তিন বছর মেয়াদি রপ্তানি নীতি অনুমোদন : বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ সহজীকরণে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ২০২১-২৪ সালের রপ্তানি নীতি খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভা বৈঠক। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানি খাতে চাহিদা ও বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রণয়নের জন্য তিন বছর পরপর রপ্তানিনীতি পরিবর্তন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এটা আনা হয়েছে।
ডব্লিউটিও-এর বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্যসেবা বহুমুখীকরণে অগ্রাধিকারমূলক পণ্যসেবা খাত চিহ্নিতকরণ, রপ্তানি শিল্পের পশ্চাৎ ও অগ্র সংযোজন শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা, শ্রমনির্ভর রপ্তানি খাতে গুরুত্ব প্রদান করা, দক্ষতা উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশ সহজীকরণে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের প্রতি রপ্তানিনীতি ২০২১-২০২৪ বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রপ্তানিপণ্য নিষিদ্ধ তালিকাও হালনাগাদ করা হয়েছে। আরেকটি বিষয় তিন থেকে চার মাস পর কমার্স সেক্রেটারির তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের অবজারভেশন নিয়ে রপ্তানিনীতি মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজন হলে মডিফাই করা হবে।
তিনি বলেন, পার্টিকুলারলি গ্রাজুয়েশনের বিষয়টি এখানে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। তারপর ২০২৬ এবং আরও তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ইইউতে আমরা যে গ্রেস পাব, তা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ইকনোমিক ডিপ্লোমেসিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমাদের অ্যাম্বাসেডররা যারা আছেন, তারা ডিপ্লোমেটিক কাজের পাশাপাশি ইকনোমিক প্রমোশন, ক্যাম্পেইন এক্সপোর্ট ইমপোর্টে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সব খাত যেন সুবিধা পায় সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের রপ্তানিতে সম্পৃক্ত করতে সুনির্দিষ্ট নীতি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহজীকরণে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। আমরা প্রাইমারি গুডস যাতে দেশের বাইরে পাঠিয়ে না দিই।
যেমন একটি উদাহরণ হচ্ছে, তুরস্ক। আমাদের কাছ থেকে র জুট নিয়ে যায়। তারা আবার ফাইনাল প্রডাক্ট বানিয়ে ইউরোপের বাজারে দেয়। আমরা অবশ্যই র জুট এক্সপোর্ট করব, কিন্তু পাশাপাশি ফাইনাল প্রডাক্ট যদি করতে পারি তাহলে ভ্যালু অ্যাড কিন্তু বেশি হচ্ছে। এগুলোকে প্রটেকশন দেয়ার জন্য কিছু বিধিবিধান এখানে আনা হয়েছে।